লিটন পাঠা, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জ জেলা জুড়ে পুরোদমে চলছে আমন ধান চাষাবাদ ফলন ভাল হওয়ার আশায় নিয়মিত সার প্রয়োগ ও ধান ক্ষেতের পরিচর্চা করছেন কৃষকরা। তবে কৃষকদের অভিযোগ, চাহিদা অনুযায়ী সার মিলছে না। সারের সংকট দেখিয়ে অতিরিক্ত দাম হাতিয়ে নিচ্ছেন ডিলারা। পাশাপাশি দাম বেড়েছে কীটনাশকেরও। অতিরিক্ত দামে সার ও কীটনাশক ক্রয় করতে গিয়ে হিমশিমে কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় ৯০ হাজার ৩শ ৬৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদ হয়েছে। এসব জমিতে কাঙ্কিত ফলন ঘরে তুলতে ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি সারের ব্যবহার জরুরি। ন্যায্যমূল্যে সার বিক্রিতে ডিলারদের দাম নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। সরকার ইউরিয়া সারের ৫০ কেজির বস্তা ১ হাজার ৩৫০, এমওপি ১ হাজার, টিএসপি-১ হাজার ৩৫০, পটাশিয়াম ১ হাজার ও ডিএপি ১ হাজার ৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে। তবে কৃষকদের অভিযোগ, খুচরা বাজারে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছেন ডিলাররা।
সারের সংকট দেখিয়ে প্রতি বস্তা ইউরিয়া ১৬শ, টিএসপি ১৮শ টাকা ও পটাশিয়াম ১৩শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা। বিক্রির মেমো দিতে অনীহা ডিলারদের। অতিরিক্ত দামে সার ক্রয় করতে হচ্ছে। সময় মত ধানে সার প্রয়োগ না করলে ফলন খারাপ হবে এমন শঙ্কায় অতিরিক্ত দাম দিয়ে সার ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে অনেকেই। অন্যদিকে, বাড়তি দামের কারনে অনেক কৃষকরা চাহিদার চেয়ে ক্ষেতে সার কম প্রয়োগ করছেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক কৃষক।
হবিগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষক শফিক মিয়া বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় সারের দাম অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। খুচরা বাজার থেকে ১৬শ টাকা করে ২ বস্তা ইউরিয়া সার নিয়েছি। কৃষক বাচ্চু মিয়া বলেন, টিএসসি সারের সরকারী মূল্য ১ হাজার ৩৫০ টাকা হলেও খুচরা বাজার থেকে ১ হাজার ৮শ টাকা দিয়ে ক্রয় করতে হয়েছে। ডিলারে সার না থাকায় আমাদের অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার শিবপাশার কৃষক রমিজ মিয়া বলেন, ‘ডিলাররা অনেক সময় সার থাকলেও বিক্রি করে না। ফলে খুচরা বাজার থেকে ক্রয় করতে হয়।
অনেক ডিলারের কাছ থেকে বেশি দামে সার নিলেও তারা মেমো দিতে রাজি না। ভাল ফলনেন আশায় অতিরিক্ত দাম দিয়েই আমাদের সার ক্রয় করতে হচ্ছে’। জেলা কৃষি সস্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমন ধানের চাষাবাদ এ বছর লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৯০ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৯০ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে। ন্যায্যমূল্যে সার বিক্রিতে ডিলারদের দাম নির্দিষ্ট করে দেয়া হযেছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রি রোধে বাজারে কাজ করছে মনিটরিং টিম।